আল্লাহ তাআলা রাসুলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ২৬ রজব দিবাগত রাত অর্থাৎ ২৭ রজব তাঁর পবিত্র দিদারে উবর্ধাকাশে নিয়ে যান। একই রাতে মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস। সেখান থেকে সপ্তম আসমানের ওপরে। সেখান থেকে আল্লাহর ইচ্ছা মাফিক আরো অনেক ওপরে নিয়ে একান্ত দিদার করেন।
অথচ তৎকালীন সময়ে শুধু মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস যেতেই সময় লাগত এক মাসেরও অধিক। অবিশ্বাস কাফের সম্প্রদার বিশ্বনবির এ ঘোষণা শুনে হাসি-ঠাট্টা ও বিদ্রোপ শুরু করলো।
একদল হজরত আবু বকরের কাছে জানতে চাইল, কেউ যদি মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস গিয়ে সেখান থেকে সপ্তম আকাশে যেতে চায়; তবে কি তা এক রাতে সম্ভব। হজরত আবু বকর জানতে চাইলেন, কে বলেছে এ কথা? তারা বলল, ‘তোমার নবি-ই তো এ কথা বলছে।
হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাদের কাছে প্রিয়নবির কথা শোনামাত্র-ই বললেন, আমি বিশ্বাস করি এবং তা সম্ভব। আর এ কারণেই হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ‘ছিদ্দিক’ উপাধি লাভ করেছিলেন।
হজরত আবু বকরের কাছে পাত্তা না পেয়ে কাফের সম্প্রদায় এবার প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গিয়ে বায়তুল মুকাদ্দাসের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করা শুরু করল।
তারা বলল, আপনিতো বায়তুল মুকাদ্দাস গিয়েছেন- প্রিয়নবি বললেন, ‘হ্যাঁ’। তখন তারা বলল, বলুনতো বায়তুল মুকাদ্দাসের কয়টা সিড়ি? কয়টা জানালা, কয়টা দরজা ইত্যাদি প্রশ্নবানে প্রিয়নবিকে জর্জরিত করতে লাগল।
যদিও কেউ কোথাও গেলে সেখানের কয়টা দরজা, কয়টা জানালা, কয়টা সিড়ি এসব গণনা করতে যায় না। তথাপিও প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাফের অবিশ্বাসীদের প্রশ্নে পেরেশান হয়ে গেল। তিনি ভাবলেন, আজ যদি তাদের প্রশ্নের জবাব দিতে না পারি, তাহলে ওরা আমাকে মিথ্যুক সাব্যস্ত করবে।
হাদিসে পাকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তখন আমার এত বেশি পেরেশানি হলো যে, ঐ রকম পেরেশানি আমার আর কখনো হয়নি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন-
فَجَلَّى اللهُ لِى بَيْتَ الْمَقْدسِ فَطَفِقْتُ اُخْبِرهُمْ عَنْ ايَاتِه وَ اَنَا اَنْظُرُ- مسلم
অর্থাৎ অতঃপর আল্লাহ পাক বায়তুল মুকাদ্দাসকে আমার চোখের সামনে তুলে ধরলেন, আর তারা যা জিজ্ঞাসা করছিল, আমি দেখে দেখে গণনা করে করে তার উত্তর দিয়ে যাচ্ছিল। সুবহানাল্লাহ!
এ রকম জাজ্বল্যমান প্রমাণ দেয়ার পরও অবিশ্বাসী সম্প্রদায় প্রিয়নবির প্রতি ঈমান আনেনি। আল্লাহ তাআলা তাদের ঈমানের মতো নেয়ামতের তাওফিক তাদেরকে দেননি।
সুতরাং বুঝাগেল মেরাজ যেমন তাওহিদ, রেসালাতের সত্যায়নের এক বিশাল দলিল। আবার তা মুসলিম উম্মাহর জন্য সেরা পুরস্কার প্রাপ্তির বিষয়ও বটে। তাছাড়া ঈমানের মতো অসামান্য নেয়ামতও মুমিন বান্দার জন্য সেরাদান।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রিয়নবির প্রতিটি জিনিসের প্রতি ঈমান রাখার এবং আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নের তাওফিক দান করুন। আমিন
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।